ইয়া ওয়াদুদু এর আমল , ফজিলত এবং পড়ার নিয়ম জানুন

আসসালামু আলাইকুম, আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নাম রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ইয়া ওয়াদুদু। যদিও আল্লাহ তাআলার প্রত্যেকটা নামই অনেক বেশি ফজিলতপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ তবে কিছু কিছু নামের আলাদা আলাদা বিশেষ গুরুত্ব আছে।ইয়া ওয়াদুদু এর আমল , ফজিলত এবং পড়ার নিয়ম জানুন

ঠিক এই নাম গুলোর মধ্যে ইয়া ওয়াদুদু নামটিও আল্লাহতালার অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি গুণবাচক নাম। তো যার কারণে আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে ইয়া ওয়াদুদু অর্থ কি এবং ইয়া ওয়াদুদু এর ফজিলত সহ এর আমল গুলো বিস্তারিত আলোচনা করব।

মনে রাখবেন আল্লাহ তাআলার যতগুলো নাম রয়েছে সবগুলোরই কোননা কোনো ফজিলত আছে। আপনি যে নাম ধরেই মহান আল্লাহ তাআলাকে ডাকেন না কেন তিনি অবশ্যই খুশি হবেন।

ইয়া ওয়াদুদু অর্থ কি

আল্লাহ তাআলার অসংখ্য গুণবাচক নাম রয়েছে এই গুনবাচক নাম গুলোর অসংখ্য আলাদা আলাদা অর্থ রয়েছে। আল্লাহতালা যেহেতু সর্বশক্তিমান এই কারণে তার নামগুলো থেকেই তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

তো ইয়া ওয়াদুদু অর্থ হচ্ছে ; ভালোবাসাকারি, অধিক মহব্বতকারী প্রেমকারি হিসেবেও আল্লাহর এই নামটির অর্থ পরিচিত।

এখানে ভালোবাসাকারি বলতে বোঝানো হয়েছে আল্লাহ তাআলা তার মুমিন বান্দাদেরকে এবং তার নবী রাসুলগণদেরকে খুব বেশি ভালোবাসেন। আর বান্দারাও আল্লাহকে ভালোবাসেন।

ইয়া ওয়াদুদু এর আমল

আল্লাহ তায়ালার প্রতিটি নামেরই কিছু কিছু আমল পাওয়া যায়। এরকম ভাবে ইয়া ওয়াদুদ নামটির ও আমল পাওয়া যায়।

বান্দারা আল্লাহ তায়ালার যে নাম ধরেই আমল করুক না কেন আল্লাহ তাআলা অবশ্যই সেই বান্দার আমলকে কবুল করুন।

তবে বন্ধুরা, সকাল বিকাল যদি আমরা আল্লাহর নামগুলো ধরে জপ করতে থাকি এবং আল্লাহর নামে জিকির করতে থাকি। তাহলে কিন্তু আল্লাহতালা আমাদের মনের আশা গুলো পূরণ করে দেবেন।

তো এই ইয়া ওয়াদুদু নামটির অর্থ যেহেতু ভালোবাসাকারি কিংবা প্রেম কারি এই কারণে আমরা যদি এই ইয়া ওয়াদুদু নামটি আমল করি তাহলে আল্লাহতালা আমাদের মধ্যে প্রেম ভালবাসা বাড়িয়ে দিবেন।

যদি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এই নামটি বেশি বেশি আমল করা হয় তাহলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই সেই স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে মহব্বত কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিবেন।

নিচে যখন আমরা আপনাদেরকে এই ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম বলে দেবো তখন আপনারা এই আমলটি ঠিকমতো বুঝতে পারবেন।

ইয়া ওয়াদুদু এর ফজিলত

আল্লাহ তাআলার সবগুলো গুণবাচক নামেরই অসংখ্য ফজিলত আছে। সব থেকে বেশি ফজিলত হচ্ছে আল্লাহু নামটির। কারণ এটিই হচ্ছে তার সর্বশ্রেষ্ঠ নাম।

তবে ইয়া ওয়াদুদু নামের ফজিলত ও বেশ কিছু জায়গায় বর্ণনা করা আছে। আল্লাহ তাআলার যে নামের অর্থ যেরকম সেই নামের ফজিলত ও ঠিক সেরকমই হয়।

যদি আপনারা আর রাজ্জাকু বলে আল্লাহ তাআলা কে ডাকেন তাহলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই আপনাদেরকে রিজিক বাড়িয়ে দিবেন। আবার ইয়া ওয়াদুদু নামের ও আলাদা ফজিলত রয়েছে।

তবে এই ইয়া ওয়াদুদু নাম এর আসল ফজিলত হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা বাড়িয়ে দেয়। যদি আপনাদের মধ্যে প্রেম ভালোবাসার কমতি থাকে তাহলে আল্লাহ তাআলার এই নামটি ধরে জপ করলে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আপনাদের ভালোবাসা বাড়িয়ে দিবে ইনশাল্লাহ।

ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম

মনে রাখবেন আল্লাহ তাআলার কোন নাম যে নিয়ম অনুযায়ী পরতে হবে এমন কোন কথা নয়। আপনারা আল্লাহ তায়ালার নামগুলোকে নিজের ইচ্ছামতো যখন খুশি তখনই পড়তে পারবেন।

কারণ বান্দারা আল্লাহকে ডাকলেই তিনি অনেক বেশি খুশি হয়ে যান। আল্লাহ তাআলা সবসময় চায় যে বান্দারা তার নাম ধরে ডাকুক এবং তার জিকির করুক।

সকাল বিকাল সন্ধ্যা যখন পাবেন তখনই আল্লাহতালার নামে জিকির করবেন। বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায় যে যারা বেশি বেশি আল্লাহতালার জিকির করবে কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে অবশ্যই নাজাত দান করবেন।

তবে আল্লাহতালার এই আলাদা আলাদা নামগুলো পড়ার ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা কিছু নিয়ম ও পাওয়া যায়। তো এই ইয়া ওয়াদুদ পরার নিয়ম নিচে বলা হলো

✓ পড়ার নিয়ম ০১

বর্ণনায় পাওয়া যায় যে স্বামী স্ত্রী যখন খেতে বসবে তখন যদি এই ইয়া ওয়াদুদু নামটি এক হাজার বার তেলাওয়াত করে খাওয়ার মধ্যে ফু দেওয়া হয়। এবং সেই খাদ্য যদি স্বামী স্ত্রী একসাথে খায়।

তাহলে আল্লাহতালা সেই স্বামী স্ত্রীর মধ্য থেকে সমস্ত ঝগড়া বিবাদ উঠিয়ে নেন এবং তাদের মধ্যে মহব্বতের ভালোবাসা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেন।

এভাবে নিয়মিত আল্লাহতালার এই ইয়া ওয়াদুদু নামটি পড়লে অবশ্যই সংসারে শান্তি এবং বরকত বেড়ে যাবে । তো যাদের সংসারে অশান্তি বেশি তারা চাইলে এই নিয়মে ইয়া ওয়াদুদু পড়তে পারেন।

✓ পড়ার নিয়ম ০২

যদি আপনার নেক সন্তান পেতে ইচ্ছা হয় তাহলেও আপনি এই আল্লাহর ইয়া ওয়াদুদু নামটি তেলাওয়াত করতে পারেন এবং আমল করতে পারেন।

আমলটি হচ্ছে , আপনাকে প্রথমে ইয়া ওয়াদুদু নামটি এক হাজার একবার তেলাওয়াত করতে হবে। তেলাওয়াত করার পর মিষ্টির উপর ফু দিয়ে সন্তান সন্ততি এবং স্বামী স্ত্রীকে খাওয়াতে হবে।

যদি আপনারা সবাই একসাথে খেতে পারেন এবং আল্লাহ তায়ালা আপনাদের আমলকে কবুল করেন তাহলে অবশ্যই আপনাদেরকে আল্লাহতালা নেক সন্তান দান করবে।

✓ পড়ার নিয়ম ০৩

বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে যাদের অশান্তি বেশি এবং মিল কম তারাও চাইলে আল্লাহ তাআলার এই নামটি আমল করে দেখতে পারেন।

এর জন্য নামটিকে ৫১ বার পাঠ করতে হবে এবং কোন খাদ্যবস্তুর মধ্যে ফু দিয়ে বন্ধুরা সবাই মিলে খেতে হবে।

যদি নেক নিয়তে কেউ ইয়া ওয়াদুদু পাঠ করে খাদ্যে ফু দিয়ে খায় এবং আল্লাহ তায়ালা সেটাতে খুশি হয় তাহলে বন্ধুর মধ্যে মিল মহব্বত বাড়িয়ে দিবেন।

উপরে আমরা মোট তিনটি পয়েন্টে এই ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম আপনাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছে। মনে রাখবেন এই নাম টি ইবাদত করলে আল্লাহ তায়ালা পরস্পরের মধ্যে মিল মহব্বত বাড়িয়ে দেয়।

তবে হ্যাঁ অবশ্যই নেক নিয়তে আমলটি করতে হবে তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা খুশি হবেন ইনশাআল্লাহ।

ইয়া ওয়াদুদু কিসের দোয়া

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে ইয়া ওয়াদুদু কিসের দোয়া। তবে আপনাদেরকে বলতে হয় যে এই ইয়া ওয়াদুদু কোন কিছুর দোয়া নয়।

এই ইয়া ওয়াদুদু হচ্ছে মহান আল্লাহতালার একটি গুণবাচক নাম। এখানে এই গুণবাচক নামটি দ্বারা আল্লাহ তাআলার একটি গুণ প্রকাশ করা হয়।

আল্লাহ তাআলার অসংখ্য গুনবাচক নাম রয়েছে আর এই অসংখ্য নাম গুলো দিয়ে তার অসংখ্য বৈশিষ্ট্য কে প্রকাশ করা হয়ে থাকে।

ঠিক একইভাবে আল্লাহ তায়ালা যেহেতু বান্দাদেরকে অনেক বেশি ভালোবাসেন এই কারণে তার নাম একটি হচ্ছে ইয়া ওয়াদুদু।

ইয়া ওয়াদুদু পড়লে কি হয়

বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায় যে বান্দাদেরকে আল্লাহতালা ১০০% ভালোবাসার মধ্যে এক পারসেন্ট ভালোবাসা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন।

আর এই ১ পার্সেন্ট ভালোবাসার কারণেই আমরা পৃথিবীতে একে অপরকে মন থেকে অনেক বেশি ভালোবেসে থাকি। আর বাকি ৯৯% ভালোবাসা আল্লাহ তাআলা তার নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন।

তাহলে বুঝতেই পারছেন যে এই মহান আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদেরকে কতটা বেশি ভালোবাসে। এর কারণ হচ্ছে মহান আল্লাহতালা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।  তার সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা থাকবেই।

তো এই ভালোবাসা থেকেই আল্লাহর একটি নাম হচ্ছে ইয়া ওয়াদুদু। তো যারা এই প্রশ্ন করে থাকেন যে, ইয়া ওয়াদুদু পড়লে কি হয়।

তাদের জন্য বলি ইয়া ওয়াদুদু পড়লে আল্লাহতালা একে অপরের প্রতি মহব্বত এবং ভালোবাসা কয়েক শ গুণ বেশি করে দেয়। তো আপনাদের সংসারে যদি মিল মহব্বত কম থাকে তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তাআলার এই নামটি আমল করবেন ইনশাআল্লাহ সংসারে বরকত বেশি হবে।

উপসংহার

আজকের এই পোস্টে আমরা আল্লাহ তাআলার একটি গুনবাচক নাম ইয়া ওয়াদুদু সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।

এখানে আমরা ইয়া ওয়াদুদু এর আমল সহ এই ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম গুলো আপনাদেরকে বিস্তারিত বুঝিয়ে দিয়েছি। আজকের আলোচনা করা পয়েন্ট গুলোর মধ্যে যদি কোন কিছু বুঝতে না পারেন তাহলে কমেন্টে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করবেন।

আরেকটি কথা মনে রাখবেন সেটা হচ্ছে আল্লাহতালার সবগুলো গুণবাচক নামই কিন্তু ফজিলতপূর্ণ এবং সবগুলোর নাম তেলাওয়াত করলেই আল্লাহ তাআলা রহমত বরকত নাযিল করেন।

এই কারণে সকাল সন্ধ্যা যখনই সময় পাবেন তখনই মহান আল্লাহতালার নামে জিকির করবেন তিনি আপনার মনের আশা পূরণ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।

Originally posted 2024-03-11 12:54:00.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *